ই-কমার্স কি | ই-কমার্সের সুবিধা ও অসুবিধা |

 
ই-কমার্স কি | ই-কমার্সের সুবিধা ও অসুবিধা |

ই-কমার্স কি

ই-কমার্স অথবা ইলেকট্রনিক কমার্স হলো ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য এবং সেবার ক্রয় ও বিক্রয়ের পদ্ধতি। এটি অনলাইনের মাধ্যমে পণ্য এবং সেবা প্রদানকারী ও গ্রাহকের মধ্যে লেনদেন সম্পন্ন করে।

ই-কমার্সে মূলত দুইটি পার্থক্যপূর্ণ উপাদান রয়েছে: প্রথমত, এটি অনলাইন বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় এবং দ্বিতীয়ত, এটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্রক্রিয়া যা মানুষের স্বাভাবিক কর্মপ্রণালী নির্বাচন করে এবং ইন্টারফেসের মাধ্যমে প্রদান করে।

ই-কমার্সে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে গ্রাহকরা পণ্য সন্ধান করতে পারে, পণ্যের বর্ণনা পড়তে পারে, দাম তুলে দেখতে পারে, পণ্যটি ক্রয় করতে পারে এবং অর্ডার দেওয়া পণ্য ডেলিভারী পেতে পারে।

ই-কমার্স ব্যবসা কি

ই-কমার্স ব্যবসা হলো ইলেকট্রনিক কমার্সের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা বিক্রয়  করার  একরকম ব্যবসায়িক পদ্ধতি। এটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে করা হয়, যেখানে গ্রাহকরা অনলাইনে পণ্য খুঁজতে পারেন, বিবরণ পড়তে পারেন, মূল্য তুলে দেখতে পারেন এবং অর্ডার করতে পারেন। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে এই ব্যবসার জন্য গড়ে ওঠা একটি নতুন ও দ্রুত বিকাশের প্রণালী হলো এই-কমার্স।

ই-কমার্স ব্যবসার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান একটি অনলাইন বাজার স্থাপন করে তুলতে পারে বা আপনার ব্যবসার অনলাইন প্রচার ও প্রচার করতে পারে। এছাড়াও, আপনি আপনার পণ্যগুলি একটি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে পাঠাতে পারেন যার মাধ্যমে গ্রাহকরা অনলাইনে অর্ডার দিয়ে পণ্য পেতে পারেন।

সরবরাহকারীরা সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্রক্রিয়া ব্যবহার করে পণ্য সরবরাহ এবং ডেলিভারি পদ্ধতি নিশ্চিত করতে পারেন। গ্রাহকদের অর্ডার পার্টনারদের পৌঁছে দেওয়া হয় এবং অর্ডার পণ্য গ্রহণের পর থেকে ডেলিভারি প্রক্রিয়া শুরু করে।

ই-কমার্স ব্যবসা বিভিন্ন ধরণের ব্যবসা মডেল সমর্থন করতে পারে। কিছু ব্যবসায় এটি পূর্ণসম্পূর্ণ অনলাইন ভিত্তিক হয়, যেমন মাত্রায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করা হয় এবং ডেলিভারি ঠিকানা পণ্যগুলি পরিবর্তন করে প্রদান করা হয়। আরেকটি মডেলে ই-কমার্স ব্যবসা সামগ্রিক ব্যবসায়িক প্রক্রিয়ার একটি অংশ হয়, যেমন অনলাইন বাজারে পণ্য সংগ্রহ করা, এটির জন্য পণ্য প্রচার ও প্রচার করা,সম্পূর্ণ বিক্রয় প্রক্রিয়া এবং শ্রমিকদের সাথে যোগাযোগ করা।

ই-কমার্স ব্যবসা আরও একটি উদাহরণ হলো মার্কেটপ্লেস মডেল, যেখানে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন বিক্রেতার পণ্য সমন্বয় করা হয়। গ্রাহকরা একটি স্থানে বিভিন্ন বিক্রেতাদের পণ্য দেখতে পারেন এবং তাদের পছন্দসই পণ্য ক্রয় করতে পারেন। এই মডেলে মার্কেটপ্লেস প্ল্যাটফর্ম অনুযায়ী বিক্রেতারা তাদের পণ্য প্রদান করতে পারেন এবং অর্ডার পরিচালনা ও ডেলিভারি পদ্ধতি নিশ্চিত করতে পারেন।
 


ই-কমার্স এর বৈশিষ্ট্য

ই-কমার্সের  অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সেই সকল বৈশিষ্ট্য গুলোর মধ্য থেকে থেকে কিছু সংখ্যক বৈশিষ্ট্য নিয়ে   নিম্নে আলোচনা করা হলো।

অনলাইন: ই-কমার্সের মাধ্যমে একটি ব্যবসা অনলাইনে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সম্পূর্ণ অনলাইন প্রক্রিয়া দ্বারা চালিত হয়। এটি কার্যকর করে গ্রাহকদের কেনাকাটা ও সেবা প্রদান করতে সহায়তা করে।

সীমাহীন বিক্রয় সুযোগ: ই-কমার্স এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা সীমাহীন গ্লোবাল বাজারে তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারেন। 
গ্রাহকরা বিভিন্ন অঞ্চলের পণ্য অনলাইনে আরও বেশি বিক্রি সুযোগ পেতে পারেন।

সুবিধা এবং সময়সূচী ব্যবস্থা: ই-কমার্স গ্রাহকদের প্রযুক্তিগত সুবিধা উপস্থাপন করে, কারণ তারা কেনাকাটা ও সেবা পেতে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বসে ঘরের  মধ্যে থেকেই অর্ডার করতে পারেন। এছাড়াও, আরো অন্যান্য সুবিধা ও রয়েছে।

বিস্তৃত পণ্য বেছে নেওয়ার সুযোগ: ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে গ্রাহকরা বিভিন্ন পণ্য বেছে নিতে পারেন যেগুলো স্থানীয় বাজারে পাওয়া কঠিন হতে পারে। এছাড়াও, অনলাইন মার্কেটপ্লেসে বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং বিক্রেতার পণ্য সমন্বয় করা হয়, যাতে গ্রাহকদের বিশাল বিকল্প থাকে।

সহজ অর্ডার প্রক্রিয়া: ই-কমার্সে গ্রাহকরা পণ্য অর্ডার করতে সহজ এবং সময়সূচী প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে পারেন। অর্ডার ফর্ম পূরণ করে এবং অর্ডার নিশ্চিতকরণের পর পণ্যগুলো তাদের নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাঠানো হয়।

উল্লেখিত বৈশিষ্ট্য গুলো ছাড়াও ই-কমার্সের আরো অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যে সকল বৈশিষ্ট্য গুলো আমাদের সকলের জানা উচিত। ই-কমার্স  বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ ও পরিচিতি লাভ করেছে। ই-কমার্সের ভবিষ্যৎ অনেক উজ্জ্বল  রয়েছে।


ই-কমার্স এর গুরুত্ব

ই-কমার্সের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। যে সকল গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত নয়। ই-কমার্সের অনেক গুরুত্ব রয়েছে তার মধ্যে থেকে কিছু সংখ্যক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে নিম্নে উল্লেখ করা হলো।

বিস্তারিত বিক্রয় সুযোগ: ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দ্বারা ব্যবসায়ীরা সীমাহীন সংখ্যক গ্রাহকের কাছে তাদের পণ্য প্রদান করতে পারেন। এর ফলে তাদের ব্যবসা বিস্তারিত হয় এবং আরও বেশি কাস্টমার প্রাপ্তি হয়।

গ্রাহকের সম্পূর্ণ অভিজ্ঞতা: ই-কমার্সে গ্রাহকদের পূর্ণাঙ্গ অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করা হয়। পণ্যের বিবরণ, মূল্য, ব্র্যান্ড, গ্যালারি ছবি, প্রযুক্তিগত বিবরণ ইত্যাদি সম্পূর্ণরূপে প্রদর্শিত হয়, যা গ্রাহকদের সঠিক তথ্য ও সুবিধা প্রদান করে। এছাড়াও, গ্রাহকদের পূর্ণাঙ্গ রিভিউ, রেটিং, ও পণ্যের উপর প্রদানকৃত মতামত দেখানো হয়, যা আরও বিশ্বস্ত বিক্রয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ায় গ্রাহকদের সাহায্য করে।

মূল্যসহ তুলনামূলক শপিং: ই-কমার্সে গ্রাহকরা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্যগুলি মূল্য, মান, ফিচার ইত্যাদি অনুযায়ী তুলনা করতে পারেন। এটি তাদেরকে পছন্দমত পণ্য নির্বাচন করতে সহায়তা করে এবং আরও বেশি মানুষকে দারুণ অপব্যবহার হতে বাঁচায়।

হোম ডেলিভারি: ই-কমার্সে গ্রাহকরা পণ্যগুলি ঘরে বসে পেতে পারেন। হোম ডেলিভারি পদ্ধতিতে ক্রয়কৃত পণ্য তাদের নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে দেয়া হয় যা গ্রাহকদের সুবিধা ও সময়সূচী ব্যবস্থা করে।

সহজ পেমেন্ট প্রক্রিয়া: ই-কমার্সে গ্রাহকরা সহজেই পেমেন্ট করতে পারেন। বিভিন্ন পেমেন্ট অপশন যেমন ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড, নেট ব্যাংকিং, মোবাইল মানি, ডিজিটাল ওয়ালেট ইত্যাদি ব্যবহার করে গ্রাহকরা পছন্দমত পেমেন্ট  মেথড ব্যবহার করতে পারে।

ই-কমার্স কি | ই-কমার্সের সুবিধা ও অসুবিধা |

ই-কমার্সের সুবিধা ও অসুবিধা

প্রতিটি বিষয়ের এ  ভালো দিক এবং খারাপ দিক থাকে। তেমনি ভাবে ই কমার্সের ও সুবিধা রয়েছে অসুবিধা রয়েছে। নিম্নে ই-কমার্স এর সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
 ই-কমার্স এর সুবিধা
  1. বিস্তৃত বিকল্প: ই-কমার্সে গ্রাহকরা পছন্দমত পণ্য নির্বাচন করতে পারেন। এটি গ্রাহকদের চাহিদামত বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং পণ্যের সমৃদ্ধ সংগ্রহ প্রদান করে।
  2. সুবিধাজনক কেনাকাটা: ই-কমার্স গ্রাহকদের সুবিধাজনক কেনাকাটা প্রদান করে। গ্রাহকরা ঘরে বসেই পণ্য ব্রাউজ করতে পারেন, পছন্দমত পণ্য নির্বাচন করতে পারেন, অর্ডার করতে পারেন এবং পণ্য ডেলিভারি পেতে পারেন।
  3. সহজ পেমেন্ট প্রক্রিয়া: ই-কমার্সে গ্রাহকরা সহজেই পেমেন্ট করতে পারেন। বিভিন্ন অনলাইন পেমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করে গ্রাহকরা কেনাকাটা সহজ করে তুলে ধরে। যে কোনো  মেথড এর মাধ্যমে পেরেন্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হয়ে থাকে।
  4. সময় ও খরচ  কম হয়: ই-কমার্সে কেনাকাটা সময় এবং খরচ দুটি কম হয়ে থাকে। গ্রাহকরা ঘরে বসেই পণ্যের  বিবরণ দেখতে পারে। এবং সেই পণ্যটি অর্ডার করতে পারে। এতে করে সময়ের অবচয় কম হয় এবং বাজার মূল্য চেয়ে সামান্য পরিমাণ কম অর্থ  খরচ হয়।
  5. গ্রাহকের  মন্তব্য উৎসাহ: ই-কমার্সে গ্রাহকের  মন্তব্য করার সুযোগ রয়েছে এবং অনেকভাবে  উৎসাহ ও পেয়ে থাকে কেনাকাটা করার জন্য। গ্রাহকরা অনলাইনে বিভিন্ন সামগ্রী, ব্লগ এবং পণ্য রিভিউ পড়ে এবং পণ্য সংক্রান্ত প্রশ্নগুলির উত্তর পাবে। তারা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে পণ্য সংক্রান্ত মতামত প্রদান করতে পারেন এবং আরও বিশ্বস্ত হতে পারেন যে তারা কেনাকাটা করছেন।
 


ই-কমার্স এর অসুবিধা

সামগ্রীর স্পষ্টতা ও অনুমানের সমস্যা: অনলাইন কেনা কাটা করার সময় গ্রাহকরা পণ্যগুলি আকর্ষণীয় ছবি দেখে  আর বিস্তারিত বিবরণ পড়ে না। হুট করেই কিনে নিয়ে থাকে।  কিন্তু পরবর্তীতে এ কারণে পণ্যের মান, রঙ, আকার ইত্যাদির স্পষ্টতা না থাকলে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

যাতায়াত এবং প্রেরণের:
ই-কমার্সে পণ্যের ডেলিভারি সম্পর্কিত সমস্যা থাকতে পারে। কেনাকাটা করার পরে পণ্যের ডেলিভারি সঠিকভাবে হয় না। অনেক সময় দেখা যায় পণ্য যখন পৌঁছানোর কথা ঠিক সময় মত পৌঁছায় না।

এছাড়াও, ডেলিভারি সময় ও খরচ বেশি হতে পারে যখন গ্রাহকরা আশাকরে থাকেন পণ্যটি দ্রুত পেতে। সাথেই কয়েকটি আর্থিক বিষয়ও দেখা যায়, যেমন শিপিং চার্জ এবং ডেলিভারির জন্য অতিরিক্ত  চার্জ ইত্যাদি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ