অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি | অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করা সম্ভব |

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি | অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করা সম্ভব |

আমরা সকলেই অ্যাফিলিয়েট নামটি সঙ্গে বেশ পরিচিত। বর্তমান সময়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং খুবই জনপ্রিয় একটি প্লাটফর্ম। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং একটি ব্যবসায়িক মডেল। যেখানে কোম্পানি তার পণ্য এবং পরিষেবা গুলো বিক্রি করতে তৃতীয় পক্ষের সাথে অংশীদারি করে থাকে। তৃতীয় পক্ষ তার পণ্যগুলো বিভিন্ন ভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট অথবা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করে বা প্রচার করে এর মাধ্যমে সেই পণ্যগুলোর বিক্রয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং পরিচালিত হয়।

আজকের আর্টিকেলটি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে সাজানো হয়েছে। আপনারা যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান অথবা এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে চান আজকের আর্টিকেল আপনাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা জানা-অজানা অনেক তথ্য জানতে পারবেন। যেমন, এফিলিয়েট মার্কেটিং কি, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন,অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করা সম্ভব, কিভাবে মার্কেটিং করবেন ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল এক ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং। বর্তমান সময়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং খুবই জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করেছেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে একজন এফিলিয়েট একটি কোম্পানির পণ্য বা পরিসেবা বিক্রয়ের মাধ্যমে কমিশন নিয়ে থাকে।

একজন অ্যাফিলিয়েট তার ওয়েবসাইট অথবা সোশ্যাল মিডিয়া বা ইমেল কমিউনিটি ব্যবহার করে কোম্পানির বিভিন্ন পণ্য প্রচার করে। পক্ষান্তরে কোম্পানির পণ্য বিক্রি বৃদ্ধি পায়। সেখান থেকে কিছু কমিশন অ্যাফিলিয়েট অর্থাৎ যারা অ্যাফিলিয়েট  করে তারা পায়। এভাবে এফিলেট মার্কেটিং পরিচালিত হয়। অনলাইনে অর্থ উপার্জন করার জন্য জনপ্রিয় মার্কেটিং গুলির মধ্যে একটি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।

এখানে খুব সহজে কোন পুঁজি ছাড়া ইনকাম করা সম্ভব। একটু পরিশ্রম করলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রতি মাসে ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। মার্কেটিং করার জন্য অবশ্যই আপনাকে কোম্পানি খুঁজে বের করতে হবে। আপনারা বিভিন্ন কোম্পানি থেকে তাদের পণ্য বিক্রয়ের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। নিম্নে আরো বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করব

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং আপনারা বিভিন্নভাবে শুরু করতে পারেন। তবে আপনি যেভাবে শুরু করেন না কেন আপনাকে মোটামুটি ভাবে পরিশ্রম করতে হবে। বিনা পরিশ্রমে কোনদিনও কোন কিছু করা সম্ভব না। আপনারা অনেকেই ভেবে থাকেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মানে কোন কিছু না করে ইনকাম করা। 

হ্যাঁ, পরবর্তীতে আপনাকে তেমন কিছু করা লাগবে না কিন্তু প্রথম অবস্থায় আপনাকে বেশ পরিশ্রম করার প্রয়োজন হবে। যেহেতু আপনারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে এসেছেন সুতরাং আমরা ধরে নিচ্ছি আপনি এ বিষয়ে আগ্রহী। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করা যায় সে সম্পর্কে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি | অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করা সম্ভব |

ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে

আপনার যদি ভালো একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকে তাহলে আপনারা সেই ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। অবশ্যই আপনার কনটেন্টগুলো ভালো হতে হবে। তাছাড়া আপনার লিংকের মধ্যে গিয়ে কেউ কখনো কোন প্রোডাক্ট নেবে না। আপনি যে সম্পর্কে কনটেন্ট তৈরি করেন সেই সম্পর্কে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন।

ধরুন, আপনি যদি মেয়েদের প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করে থাকেন তাহলে আপনারা বিভিন্ন কোম্পানির প্রোডাক্ট মার্কেটিং করতে পারেন। বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর লিংক আপনার youtube এ তুলে ধরবেন অথবা সে পণ্যগুলো সম্পর্কে জানাবেন। সেখানে গিয়ে যদি কেউ সে প্রোডাক্ট কেনে তাহলে সেখান থেকে আপনি একটি কমিশন পাবেন। এভাবেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে করতে পারেন।

ব্লগিং এর মাধ্যমে

আমরা বর্তমান সময়ে অনেক মানুষ ব্লগিং সাইট ব্যবহার করে থাকি। আমাদের অনেকেরই খুব ভালো ভালো ব্লগিং সাইট রয়েছে। আমরা সেই সকল সাইট গুলোর মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারি। আপনার সাইটে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিজিটর থাকে তাহলে আপনারা এফিলিয়েট মার্কেটিং খুব সহজেই করতে পারবেন ব্লগিং সাইটের মাধ্যমে।

আপনারা আপনাদের সাইট এ বিভিন্ন লিঙ্ক শেয়ার করার মাধ্যমে আপনারা সেখান থেকে কমিশন পেতে পারেন। আপনারা এমাজন, আলিবাবা ইত্যাদি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করতে পারেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে অন্যান্য যে কোন কাজের তুলনায় বেশি অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি | অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করা সম্ভব |

ফেসবুক পেজ

আমরা জানি ফেসবুক পেজ থেকে ইনকাম করা সম্ভব। আপনারা হয়তো জানেন না ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ও এফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়। শুধুমাত্র ফেসবুকে মনিটাইজেশন পেলেই ইনকাম হবে এমনটা না। আপনার পেজ যদি সচল থাকে অর্থাৎ পেজে যদি পর্যাপ্ত ভিজিটর থাকে আপনি যদি ফেসবুক থেকে মনিটাইজেশন না ও পান তবুও আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ফেসবুক পেজ থেকে বিশাল পরিমাণ এমাউন্ট আয় করতে পারবেন।

আমরা বেশিরভাগ মানুষ ফেসবুকে বেশি সময় ব্যয় করে থাকি। অর্থাৎ বেশি ব্যবহার করে থাকি ফেসবুক। সুতরাং আপনারা যদি পেজ যদি ভালো ভিজিটর আসে আপনি পেজের মাধ্যমে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে আপনি যে কোম্পানির মার্কেটিং করতে যাচ্ছেন সেই কোম্পানির পণ্য সম্পর্কে কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন এবং লিঙ্ক দিতে পারেন।

সেই লিংকে ক্লিক করে কেউ যদি সেই পন্য ক্রয় করে তাহলে সেই পণ্যের উপর নির্ভর করে আপনাকে কমিশন দেয়া হবে। এটি হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম গুলোর থেকে অথবা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ফেসবুকের মাধ্যমে বেশি পরিমাণ অর্থ আয় করা সম্ভব। কারণ আমরা জানি ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি মানুষ সময় ব্যয় করে থাকে। সুতরাং এখান থেকে ভিজিটর পাওয়া খুবই সহজ।

টুইটার

আপনারা টুইটারের মাধ্যমে ও এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। আপনার যদি একটি ভালো টুইটার একাউন্ট থাকে সেখান থেকে আপনারা এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করতে পারেন। টুইটার থেকেও আয় করা যায়। তবে টুইটারের মাধ্যমে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে ও আয় করা সম্ভব।

সবচেয়ে বেশি পরিমাণ অর্থ আয় করা সম্ভব এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে। এই মার্কেটিং করতে কোন পুঁজির প্রয়োজন হয় না। আপনি যে কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট নিয়ে বিক্রয় করতে পারলে সেখান থেকে আপনাকে একটি কমিশন দেওয়া হবে। সেই কমিশন টাই মূলত আপনার ইনকাম। আপনি যত বেশি সেল করতে পারবেন তত বেশি টাকা আয় করতে পারবেন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি | অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করা সম্ভব |

টেলিগ্রাম চ্যানেল

আপনারা টেলিগ্রাম চ্যানেলের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করতে পারেন। আপনাদের অনেকেরই বড় বড় টেলিগ্রাম চ্যানেল রয়েছে। যে সকল চ্যানেলগুলোতে অনেক মেম্বার রয়েছে। সেই সকল মেম্বার গুলোর কাছে আপনাদের লিংক শেয়ারের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করতে পারেন। এক্ষেত্রে ও আপনারা ভালো পরিমাণ অর্থ করতে পারবেন।

বর্তমান সময়ের টেলিগ্রাম চ্যানেলের মাধ্যমে অনেক ধরনের কাজ করা হয়ে থাকে। বিভিন্নজন বিভিন্ন রকম প্রোডাক্ট বিক্রয় করে থাকে। যেমন, পোশাক-আশাক, বই ইত্যাদি। আপনারা ও আপনাদের কোম্পানির প্রোডাক্ট এর লিংক শেয়ারের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করা সম্ভব

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা ইনকাম করবেন এটা সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করবে। আপনি যত বেশি পণ্য বিক্রয় করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার লিংক এর মাধ্যমে যত বেশি পণ্য ক্রয় হবে আপনি তত বেশি টাকা আয় করতে পারবেন। তবে প্রাথমিক অবস্থায় এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রতি মাসে পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব হয়।

তবে এফিলিয়েট মার্কেটিং যদি আপনি সঠিকভাবে করতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনি লক্ষ টাকার বেশি আয় করতে পারবেন। যারা প্রফেশনাল এফিলিয়েট মার্কেটিং করে তারা প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে খুব সহজে খুবই বেশি পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। যা অন্যান্য কাজ করে এত পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা সম্ভব হবে না। আপনারা বুঝতে পেরেছেন এফিলিয়েট  মার্কেটিং এর মাধ্যমে কেমন অর্থ ইনকাম করা সম্ভব।

আরো জানতে ভিজিট করুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ