ই-কমার্স মার্কেটিং গাইডলাইন

ই-কমার্স মার্কেটিং গাইডলাইন

বর্তমান সময়ে ই-কমার্সের মাধ্যমে মার্কেটিং করে মানুষ ভালো পরিমাণ অর্থ আয় করতে পারছেন। বিভিন্ন রকম ভাবে ই-কমার্সের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব। ই-কমার্স এর মাধ্যমে খুব সহজে ব্যবসা পরিচালনা করা যায় এবং ব্যবসা করা যায়। ই-কমার্সের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন রকম সুযোগ-সুবিধা পেতে পারি।

আজকের আর্টিকেলে মূলত ই-কমার্স মার্কেটিং সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করব। ই-কমার্স মার্কেটারদের বিভিন্ন কৌশল ও প্লাটফর্ম এর সাথে পরিচিত থাকা আপনাদের উচিত। আজকে আর্টিকেল আপনি যদি সম্পূর্ণভাবে মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে সেই সকল কৌশল এবং প্ল্যাটফর্ম গুলোর সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সকল তথ্যগুলো সম্পর্কে।

ই-কমার্স মার্কেটিং গাইডলাইন

বর্তমান সময়ে আমরা ই-কমার্স নামটির সঙ্গে সকলে পরিচিত। ই-কমার্স হল অনলাইন পণ্য বা পরিষেবা। আমরা ই-কমার্সের মাধ্যমে বিভিন্ন জিনিস বিক্রয় এবং ক্রয় করতে পারি। অর্থাৎ ই-কমার্স হল ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে পণ্য, সেবা, তথ্য ক্রয় বিক্রয়, হস্তান্ত্র বিনিময় কার্যক্রম।

বর্তমান সময়ে আমরা ঘরে বসে যে কোন জিনিস যে কোন স্থান থেকে ক্রয় করতে পারি। সেই জিনিসটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারি পছন্দ মতো ক্রয় করার পরে পেমেন্ট প্রক্রিয়া ও সম্পন্ন করতে পারি। এই সকল কাজগুলো বর্তমান সময়ে আমরা ঘরে বসেই করতে সক্ষম। ই-কমার্স মার্কেটিং এর গাইডলাইন সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

বাংলাদেশের ই-কমার্স এর জন্য সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন মোটামুটি ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমরা বলতে পারি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, আমার অনেক সময় অনেক কিছু কেনার জন্য অথবা অনেক ওয়েবসাইটে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করে থাকি। অনেক সময় আমরা ওয়েবসাইটের নাম মনে না রাখার কারণে সেই সকল ওয়েবসাইটে ঢুকতে আমাদের বেশ হয়রানির শিকার হতে হয়।

কারণ সেই সকল ওয়েবসাইট গুলো আমরা সহজে খুঁজে পাই না। কিন্তু সেই সকল ওয়েবসাইট গুলোর নাম যদি ইমপ্রুভ করা হয় যাতে মানুষ খুব সহজে মনে রাখতে পারে। তাহলে সেখান থেকে আমরা বেশ ভিজিটর পাব। যদি আপনি আপনার অবস্থান প্রথম অবস্থাতেই শক্ত করতে পারেন তবে আপনি একটা সময় সার্চ ইঞ্জিনটিতে প্রচুর পরিমাণ ভিজিটর পাবেন এবং তাদের সাথে আপনার প্রোডাক্ট সেল ও বৃদ্ধি পাবে।

সার্চ ইঞ্জিনের জন্য কি করা প্রয়োজন

আমাদের সকলের সার্চ ইঞ্জিন সম্পর্কে জ্ঞান থাকা জরুরী। ই-কমার্স মার্কেটিং এ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সার্চ ইঞ্জিন বিভিন্ন তথ্য অনুসন্ধানকারীকে খুঁজে পেতে সাহায্য করে থাকে। তাই আমাদের সকলের উচিত সার্চ ইঞ্জিন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা। অনুসন্ধানকারী যে সকল জিনিসগুলো খোঁজ করে থাকে সেগুলো সার্চ ইঞ্জিন বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করে অনুসন্ধানকারীকে সার্চের ফলাফল দেখায়। সার্চ ইঞ্জিনের জন্য আমাদের কি কি করা প্রয়োজন তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।

কিওয়ার্ড রিসার্চঃ- আপনি যে সকল ধরনের প্রোডাক্ট অনলাইনের মাধ্যমে সেল করতে চান সেই সকল প্রোডাক্ট এর জন্য যে সকল কিওয়ার্ড বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেই সকল কিওয়ার্ড গুলো নির্বাচন করুন। যেন সেই সকল কি ওয়ার্ডগুলো থেকে আপনারা পরবর্তী সময়ে ভালো কিছু অর্জন করতে পারেন।

ভিডিওঃ- আপনারা আপনাদের সাইটে যে সকল প্রোডাক্ট গুলো বিক্রয় করতে যাচ্ছেন সেই সকল প্রোডাক্ট গুলোর সাথে ভিডিও যোগ করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনাদের সেই সকল প্রোডাক্টগুলোকে ফাস্ট ইঞ্জিন স্টক অথর মনে করবে। তাই আপনাদের প্রোডাক্ট এর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ভিডিও রাখার চেষ্টা করুন।

লোকাল এসিওঃ- অনেকে রয়েছেন যারা শুধুমাত্র অনলাইনে নয় তার পাশাপাশি দোকানে ও প্রোডাক্ট সেল করে থাকেন। এক্ষেত্রে আপনাদের লোকাল এসইও করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে আপনাদের কাস্টমার ভালো বৃদ্ধি পাবে। কোন কাস্টমার যদি আপনার কিওয়ার্ড লিখে সার্চ করে সেক্ষেত্রে স্তরের ম্যাপসহ সম্পূর্ণ তথ্য দেখতে পারবে। এক্ষেত্রে খুব দ্রুত সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট কিওয়ার্ড র‍্যাংক হয়ে থাকে।

ই-কমার্স মার্কেটিং গাইডলাইন

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিভিন্নভাবে ইনকাম করা সম্ভব। আর আপনারা যেহেতু ই-কমার্স বিজনেস করতে যাচ্ছেন সুতরাং আপনারা সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান রাখেন। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা বুঝতে পারি। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রোডাক্ট মার্কেটিং এবং প্রোডাক্ট সেল করতে পারি।

বর্তমানে সকলের সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট গুলোতে ছেলেদের পরিমাণ বেশি রয়েছে। অ্যাভারেজ বয়স হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ বছর। অনেক ধরনের সোশ্যাল মার্কেটপ্লেস রয়েছে। সেই সকল মার্কেটপ্লেসগুলো থেকে আমরা বিভিন্নভাবে আমাদের প্রোডাক্ট সেল করতে পারি।

তবে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তাছাড়া আপনি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মার্কেটিং করতে পারবেন না। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার জন্য যে সকল কাজগুলো এবং যে সকল বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো। এগুলো যদি আপনি সঠিকভাবে করতে পারেন তবে আপনার ই-কমার্স বিজনেস খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।

কাস্টমার খোঁজাঃ- সোশ্যাল নেটওয়ার্কের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যে সকল প্লাটফর্ম গুলোর মাধ্যম দিয়ে আপনারা কাস্টমার খুঁজতে পারেন। যেমন, facebook, twitter, instagram, ইত্যাদি। আপনাদের যে প্রোডাক্ট রয়েছে সেই প্রোডাক্ট কোন সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মটিতে বেশি চাহিদা থাকবে সেইটিতে আপনারা মার্কেটিং করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনারা বিভিন্ন টোলসের সাহায্য নিয়ে দেখতে পারেন আপনার প্রোডাক্ট এর চাহিদা কোন সোশ্যাল প্লাটফর্মে বেশি রয়েছে।

সফল ব্যক্তিদের প্রতি নজর রাখাঃ- আপনারা অনেকেই ভাবছেন ই-কমার্স মার্কেটিং করার জন্য কেন সফল ব্যক্তিদের প্রতি নজর রাখা উচিত। যারা সফল ব্যক্তি রয়েছে তাদের দিকে ই-কমার্স মার্কেটিং করার জন্য নজর রাখা উচিত কেন তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
  • প্রথমত আপনি যে প্রোডাক্ট নিয়ে বিজনেস করতে চাচ্ছেন সে প্রোডাক্ট নিয়ে যে সফল হয়েছে সে কিভাবে সফল হল, কোন কাজগুলো করল, এগুলো জানলে আপনার মধ্যে তেমন একটি ধারণার সৃষ্টি হবে। সেখান থেকে আপনারা ভালো কিছু করতে পারবেন।
  • তারা কিভাবে কনটেন্ট তৈরি করেছে তাদের পণ্যগুলো সম্পর্কে, তারা কিভাবে তাদের সোশ্যাল প্লাটফর্ম আপডেট করেছে এই সকল বিষয়গুলো দেখতে পারবেন।
  • যারা সফল ব্যক্তি রয়েছে তারা কিভাবে তাদের পণ্যগুলো বিভিন্ন সোশ্যাল প্লাটফর্মে তুলে ধরছে বা উপস্থাপনা করছে এগুলোর দিকে নজর রাখবেন। তাহলে আপনি আপনার পণ্যগুলো তেমনিভাবে উপস্থাপনা করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনার বিক্রয় বৃদ্ধি পাবে।

পেজে প্রোডাক্ট শেয়ার করাঃ- প্রোডাক্ট সেল করার অন্যতম মাধ্যম পেজ। পেজের মাধ্যমে আপনারা আপনাদের প্রোডাক্ট সেল করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার পেইজে ফলোয়ার থাকতে হবে। আপনি পেজে যদি আপনার প্রোডাক্ট সুন্দরভাবে তুলে ধরতে পারেন তাহলে পেজ থেকে আপনারা নিয়মিত কাস্টমার পেতে পারেন। আপনারা পেজে প্রোডাক্ট দেওয়ার পরে সেই প্রোডাক্ট প্রমোট করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে আপনার সেই প্রোডাক্ট অনেক ভিজিটরের কাছে পৌঁছাবে। সেখান থেকেও আপনার প্রোডাক্ট সেল হতে পারে।

ই-কমার্স মার্কেটিং গাইডলাইন

ফেসবুক মার্কেটিং

আপনার ই-কমার্স ব্যবসাকে দাঁড় করানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর ফেসবুক মার্কেটিং সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে। কারণ ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি মানুষ থেকে থাকে। ফেসবুকে নিম্ন শ্রেণী থেকে উচ্চ শ্রেণী পর্যন্ত সকল মানুষই থাকেন। অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম গুলোর চেয়ে ফেসবুকে অনেক বেশি ভিজিটর পাবেন। যে কারণে ফেসবুকের মাধ্যমে আপনারা ই-কমার্স ব্যবসাকে দাঁড় করাতে পারেন।

ফেসবুকে আপনারা আপনাদের বিভিন্ন প্রোডাক্ট শেয়ার করার মাধ্যমে আপনাদের প্রোডাক্ট সেল করতে পারেন। আপনারা যে সকল প্রোডাক্ট গুলো ফেসবুকে শেয়ার করবেন অথবা ভিডিও আকারে প্রকাশ করবেন সেই সকল প্রোডাক্ট গুলো যাদের পছন্দ হবে তারা আপনাদের সেই প্রোডাক্ট গুলো ক্রয় করবে। এভাবে আপনারা ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনাদের ব্যবসাকে দাঁড় করাতে পারেন। এছাড়াও আরও অনেকভাবে ফেসবুক থেকে আপনাদের প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারেন যার নিম্নে উল্লেখ করা হলো।

কনটেন্ট আপলোডঃ- আপনারা আপনাদের পেজ অথবা ফেসবুকে আপনাদের প্রোডাক্ট শেয়ার করার মাধ্যমে অথবা তুলে ধরার মাধ্যমে বিক্রয় বৃদ্ধি করতে পারেন। অবশ্যই আপনাদের ভিডিওগুলো অথবা প্রোডাক্টগুলো অনেক আকর্ষণীয় হতে হবে। তাহলে আপনাদের ফেসবুক ফ্যান বা ফলোয়ার সেই প্রোডাক্টগুলো ক্রয় করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করবে। অতঃপর আপনাদের প্রোডাক্ট যদি সঠিক থাকে তাহলে আপনাদের পেজ অথবা ফেসবুকের নাম মনে রাখবে এবং পরবর্তী সময়ে এখান থেকে আপনি আরো অন্যান্য প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারবেন।

শেষ কথা,

ই-কমার্স মার্কেটিং গাইডলাইন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টস বক্সে কমেন্ট করবেন। ই-কমার্স সম্পর্কিত আরো আর্টিকেল আমাদের সাইট এ প্রকাশ করা হয়েছে। আপনারা সেখান থেকে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে পারেন। অথবা আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকলে খুব দ্রুত সময়ে তা কমেন্ট করে দেবেন। আমরা আপনাদের মূল্যবান প্রশ্নের উত্তর দেবার চেষ্টা করব ”ধন্যবাদ”।

আরো জানতে ভিজিট করুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ