ই-কমার্সে ডিজিটাল প্রেমেন্ট পদ্ধতি |

ই-কমার্সে ডিজিটাল প্রেমেন্ট পদ্ধতি

ই-কমার্সে ডিজিটাল প্রেমেন্ট পদ্ধতি

বর্তমান সময়ে ই-কমার্স খুবই পরিচিত একটি নাম। আজকে আমরা আপনাদের সঙ্গে ই-কমার্সে ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতি সংক্রান্ত তথ্যগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। এই আলোচনা থেকে আপনারা ই-কমার্সে ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। এই সকল তথ্যগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

ই কমার্স বিশ্ব একটি মার্কেট প্লেস প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন এবং উদ্যোক্তাদের কাছে একটি নতুন ধরনের ব্যবসায়িক মাধ্যম পরিচালনা করেছেন। এই প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে গ্রাহকরা অনলাইনে পণ্য কেনার এবং পরিবেশন করার সুযোগ পাচ্ছেন। নিজের ইচ্ছামত যে কোন পণ্য অর্ডার করতে পারছেন এবং যেকোনো পণ্যের মূল্য, পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারছেন। গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী যে কোন পণ্য খুব সহজেই অর্ডার করে ঘরে বসেই নিতে পারছেন।

এই ডিজিটাল বিপ্লবের একটি মূল ফলাফল হলো ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা। বিভিন্ন মাধ্যমে ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু রয়েছে। ই-কমার্স ব্যবসায়িক পদ্ধতিতে যারা ব্যবসা পরিচালনা করেছেন তারা গ্রাহকরা যেন ডিজিটাল মাধ্যমে পেমেন্ট প্রদান করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করেছেন। অনলাইন বা মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে গ্রাহকরা খুব সহজেই পেমেন্ট করতে পারছেন।

বিভিন্ন মাধ্যমে ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু রয়েছে। যেমন, বিকাশ এর মাধ্যমে আপনি পেমেন্ট করতে পারবেন। ক্রেডিট কার্ড এর মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন, ডেবিট কার্ড, নেট ব্যাঙ্কিং, মোবাইল মানি ট্রান্সফার ইত্যাদি। আপনি এই সকল পেমেন্ট ব্যবস্থা গুলো ছাড়াও আরো অন্যান্য মাধ্যমে ও পেমেন্ট প্রদান করতে পারেন। এই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নিচে উল্লেখ করা হলো।

নগদ লেনদেন ছাড়াই অর্থনীতি

হয়তো আপনারা অনেকেই ভাবছেন নগদ লেনদেন ছাড়া অর্থনীতি কিভাবে সম্ভব। বর্তমান সময়ে সব কিছুই অনেক সহজ হয়ে গেছে। নগদ লেনদেন ছাড়া অর্থনীতি হলো এমন একটি অর্থনীতি পদ্ধতি যেই পদ্ধতিতে লেনদেন করার জন্য নগদ অর্থ ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না। প্রযুক্তিগত উপায়ে ডিজিটাল পেমেন্ট এর মাধ্যমে অর্থ আদান প্রদান করা যায়। যেমন, ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম, ব্যাংকিং যন্ত্রাংশ সমূহ, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, ক্রেডিট এবং ক্রেডিট কার্ড ইত্যাদি।

নগদ লেনদেন ছাড়াই অর্থনীতি সম্প্রসারণের মাধ্যমে ব্যবসায়িক অপারেশনগুলো সহজ হয়ে গেছে। এই পদ্ধতি আমাদের সম্পূর্ণ কাগজপত্র নিরাপত্তা এবং অস্থায়ীতা নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ আমরা বলতে পারি, একটি ব্যবসায়িক সনদ বা পণ্য ক্রয়ের জন্য গ্রাহক ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবহার করে পেমেন্ট করতে পারেন এবং ব্যবসায়ীর কাছে তার পেমেন্ট অবহিত হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে যে পেমেন্ট করেছে সে এগুলা বিস্তারিত দেখতে পারবে এবং যেই পণ্যের বিনিময়ে প্রেমেন্ট করেছে যেই কোম্পানিতে করেছে তারা ও দেখতে পারবে।

এছাড়াও এই পদ্ধতিতে ব্যবসায়ীদের হিসাব সংরক্ষণ, স্টক ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং এবং প্রচার প্রচারণার সুবিধা হয়। নগদ লেনদেন ছাড়া অর্থনীতি এর মাধ্যমে আমাদের ট্রান্সপারেন্সি বৃদ্ধি হয়। উদাহরণস্বরূপ আমরা বলতে পারি যে, নগদ লেনদেন ছাড়া অর্থনীতিতে সমস্ত লেনদেন সমূহের তথ্য পরিষ্কার ভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়। প্রতিটি লেনদেন এর সময়, তারিখ, সাল সকল কিছু উল্লেখ থাকে।

নগদ লেনদেন ছাড়াই অর্থনীতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আমরা বলতে পারি, নগদ লেনদেন ছাড়াই অর্থনীতি সম্প্রসারণ ও ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াগুলি সহজ করে তোলে এবং তার পাশাপাশি লেনদেনের নিরাপত্তা, লেনদেন সংক্রান্ত তথ্যের উন্নতি ট্রান্সপারেন্সি এবং দ্রুত প্রচলন সুনিশ্চিত করে থাকে।

ব্যাংক একাউন্টের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি

ব্যাংক একাউন্ট আমরা বর্তমান সময়ে খুবই বেশি ব্যবহার করে থাকি। আমাদের অনেকেরই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। বর্তমান সময়ে ব্যাংক একাউন্টের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হলো আর্থিক সম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় একটি সরঞ্জাম। আমাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এর প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধির পেছনে যে সকল কারণগুলো রয়েছে অথবা যে সকল উপকরণগুলো রয়েছে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
  • নিরাপত্তাঃ- আমরা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এর মাধ্যমে আমাদের অর্থ কে নিরাপত্তা প্রদান করতে পারি। আমরা যে সকল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে থাকি তাদের বিশ্বাস করি বিধায় আমাদের অর্থ তাদের কাছে গচ্ছিত রাখে। তেমনিভাবে ব্যাংক সংস্থারাও নিজের গ্রাহকদের অর্থ খুবই ভালোভাবে সংরক্ষণ করে রাখেন।
  • অর্থ সঞ্চয়ঃ- ব্যাংক একাউন্টে অর্থ জমা করে রাখা যায় এবং তার পাশাপাশি সঞ্চয় ও করা যায়। এটি আমাদের আর্থিক সুরক্ষা প্রদান করে থাকে। ব্যাংক একাউন্ট থাকলে সেখানে সঞ্চয় এর মাধ্যমে আমরা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য কিছু সঞ্চয় করে অথবা জমা করে বিভিন্ন সময় কাজে লাগাতে পারি। বাড়তি টাকা আপনার একাউন্টে জমা করার মাধ্যমে আপনি সঞ্চয় করতে পারেন এই টাকা আপনার পরবর্তী ইনকাম অর্জনের সহায়তা করে।
  • অর্ধ পরিশোধঃ- ব্যাংক একাউন্ট আপনাকে নির্দিষ্ট সময়ে বিভিন্ন পেশাদার ও ব্যক্তিগত অর্থ পরিশোধ করতে সহায়তা করে। মাসিক এবং বার্ষিক বিল পরিশোধ, বিভিন্ন ঋণ পরিষদ, কর পরিষদ ইত্যাদির জন্য আমরা ব্যাংক একাউন্ট ব্যবহার করতে পারি। আরো অন্যান্য ক্ষেত্রেও আমরা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অর্থ পরিশোধ করতে পারি।
  • অর্থ লেনদেনঃ- আমরা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এর মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি অর্থ লেনদেন করে থাকি। তাই আমরা বলতে পারি যে ব্যাংক একাউন্ট সাধারণত অর্থ লেনদেন এর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন লেনদেন করতে পারি। যেমন, পণ্য ক্রয় করে বিল পেমেন্ট করা, পরিবহন খরচ, পরিবারের মাসিক খরচ ইত্যাদি। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে আমরা যে সকল অর্থ লেনদেন করে থাকি এটি আমাদের আর্থিক সংক্রমণ এবং লেনদেনের নগদ প্রয়োজন কমিয়ে তোলে।

ই-কমার্সে ডিজিটাল প্রেমেন্ট পদ্ধতি

রিয়েল টাইম পেমেন্ট

রিয়েল টাইম পেমেন্ট এমন একটি প্রক্রিয়া বা পেমেন্ট ব্যবস্থা যা ব্যবহার করে আমরা খুব দ্রুত সময়ের ব্যক্তিগত লেনদেন অথবা ব্যবসায়িক লেনদেন সম্পূর্ণ করতে পারি। রিয়েল টাইম পেমেন্ট পদ্ধতিটি একটি ইলেকট্রনিক পেমেন্ট পদ্ধতি যা পেমেন্ট প্রাপ্তির প্রক্রিয়াটি অনুমোদন এবং সম্পন্ন করে।

রিয়েল টাইম পেমেন্ট এর উদাহরণ হিসেবে আমরা বলতে পারি যে, ব্যাংক টু ব্যাংক অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম। অথবা মোবাইল মানি ট্রান্সফার ইত্যাদি প্রক্রিয়া। এই পেমেন্ট পদ্ধতির মাধ্যমে আমরা অর্থনৈতিক লেনদেন খুব সহজেই করতে পারি। রিয়েল টাইম পেমেন্ট ব্যবহার করে ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়ী পেমেন্ট নিজের একাউন্ট থেকে অন্য ব্যক্তির একাউন্টে খুব সহজেই দেওয়া সম্ভব।

এই পেমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করে আমরা বিভিন্ন রকম লেনদেন সম্পূর্ণ করে থাকি। যেমন, বিভিন্ন বিল পরিশোধ, কেনাকাটা করার পরে পেমেন্ট দেওয়া, বিনিয়োগ, ওয়েবসাইট কেনা, পেমেন্ট গেটওয়ে এছাড়াও আরো অন্যান্য ক্ষেত্রে। এই পেমেন্ট সিস্টেমে আমরা বেশ সুবিধা ভোগ করতে পারি। আমরা ঘরে বসে অথবা যে কোন স্থানে থেকে যেকোনো অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান করতে পারি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ